
অগ্রজ কবিকে নিয়ে বললেন কবি রাহুল পুরকায়স্থ।
জরুরি অবস্থার সময়ে লিখেছিলেন - "উল্টে থাকা কাঠগড়াতে তরুণ ভেবে, ওরা কেবল বিকলাঙ্গের জন্ম দেবে"- যার শেষ দুটি লাইন ছিল, "রাজধানীতে গাজন নাচছে, মর্যাদাময় জহ্লাদেরা"।আরও একটা কবিতার শেষ দু'লাইনও মনে ঘুরে ফিরে আসছে। ইরাক যুদ্ধের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সৈনিকেরা দেশে ফিরছে, তাদের জন্য এয়ারপোর্টের বাইরে দাঁড়িয়ে আছে তরুণীরা বিজয়মাল্য নিয়ে। অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত লিখলেন, "একেও যদি বিজয় বল, আমার তবে বলার কিছুই নেই "।
অলোকরঞ্জনের কবিতার কাছে আমি বারবার আসি, বারবার আসি শুধু তাঁর শব্দের অভিনব ব্যঞ্জনার জন্য নয়, কোথাও তিনি আমাদের বিদ্ধ করেন আমাদের না পাওয়া জীবনের এক তীব্র ভালোবাসায়। বাংলা কবিতার এক অনিবার্য ব্যক্তিত্ব তিনি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, তিনি যদি এখানেই থাকতেন আমাদের বাংলা কবিতার চেহারা একটু অন্যরকম হতো। অলোকরঞ্জনের কবিতার পটভূমি দিগন্তবিস্তৃত। আজ সকাল থেকে দু'টি কথার টুকরো মনে ঘুরপাক খাচ্ছে, একটি হলো বাঙালি কবির আন্তর্জাতিকতাবোধ, অন্যটি শরণার্থীর বেদনারেখা। চলে যেতে হয়, বয়স হয়েছিল, ভুগছিলেনও, তবু কোথাও যেন মেনে নিতে কষ্ট হচ্ছে। বারবার মনে পড়ছে তাঁর সেই কবিতার লাইন -"পোড়ামাটির ওপর দিয়ে আকাশরথ যায় "- ভাবছি, সেই রথের সওয়ারি অলোকরঞ্জন স্বয়ং। এভাবেই বোধ হয় নিজের মৃত্যুকে তিনি যাপন করে গেলেন!
Comments